প্রাণিসম্পদ খাতে মহিষের গুরুত্ব এখনো অবমূল্যায়িত - মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, গবাদিপশুর তালিকায় মহিষকে যথাযথভাবে স্থান দেওয়া হয়নি। প্রাণিসম্পদ খাতে মহিষের গুরুত্ব এখনো অবমূল্যায়িত। দেশে মহিষের সংখ্যা কমে যাওয়া উদ্বেগজনক, চারণভূমির অভাব মহিষ পালনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপদেষ্টা গতকাল সাভারের মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বাফেলো অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘বৈজ্ঞানিক সম্মেলন-২০২৫’- এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, মহিষ দেশের সম্পদ, কিন্তু দীর্ঘদিন অবহেলিত থেকেছে—এ অবহেলা যেন আর না হয়, সরকারের পক্ষ থেকে সে বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, মহিষের দুধ থেকে শুধু দই নয়, চিজসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে খামারিদের আয়ের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। এসব পণ্য রপ্তানিযোগ্য হিসেবেও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মিলিয়েই খাদ্য উৎপাদন গড়ে ওঠে। কিন্তু অনেকেই খাদ্য উৎপাদন বলতে কেবল কৃষিকেই বোঝেন। কৃষিতে কীটনাশক ও আগাছানাশকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় গরু, ছাগল, মহিষ ঘাস খেতে পারছে না। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির নামে মহিষের চারণভূমি হ্রাস পাচ্ছে, যা মোটেও কাম্য নয়। তিনি এ সময় কীটনাশক ব্যবহারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং খাদ্য উৎপাদনে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সম্মেলনে ড. প্রীতিশ ভারতের হরিয়ানায় প্রান্তিক কৃষকের দৃষ্টিকোণ থেকে মুরাহ মহিষ ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এছাড়া, ড. হিরন্ময় বিশ্বাস ইটালির দুধ উৎপাদন ব্যবস্থাপনা এবং বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে টেকসই মহিষ দুধ উৎপাদনের সম্ভাবনা তুলে ধরেন। এ সময় স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন ড. গৌতম কুমার দেব।
বাংলাদেশ বাফেলো অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ রুহুল আমিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নীলুফা আক্তার, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবু সুফিয়ান ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক।
সম্মেলনে বিজ্ঞানী, সরকারি ও বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং মহিষ সেবাদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা সাভারে অবস্থিত কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার চত্বরে নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরি উদ্বোধন করেন এবং এর বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। এ সময় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের পরিচালক মোঃ শাহজামান খানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রঃ পিআইডি